বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন নিয়মিত কর পরিশোধকারী

 


বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কিছুদিন আগে এক পরিপত্র জারি করে। সেখানে চলতি অর্থবছরে আবাসন খাতে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ কারা পাবেন তা স্পষ্ট করা হয়েছে এবং একইসাথে পরিপত্রে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও শর্ত জারি করা হয়েছে। 


জারিকৃত পরিপত্রে আবাসন খাতে উৎস করের পরিমাণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জন্য প্রণিত পরিপত্রে সম্পদশালীদের ওপর আরোপিত সারচার্জের হার বাড়িয়ে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত বহাল রাখা হয়েছে কর অবকাশ সুবিধা। গাড়ির নিবন্ধন ফি, রুট পারমিট, ফিটনেস, মালিকানা সনদ চূড়ান্ত করে পরিপত্রে আরো কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। এসব শর্ত চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে কার্যকর বলে গণ্য করা হবে।


জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই পরিপত্রের মাধ্যমে স্পষ্ট করে উল্লেখ যে, আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ পেতে হলে রিটার্ন দাখিলের আগেই করদাতাকে নিয়মিত কর পরিশোধ করতে হবে এবং চলতি অর্থবছরেই রিটার্ন জমা দিতে হবে। করদাতার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ বা অন্য কোনো আইনের আওতায় আর্থিক বিষয়ে কোনো কার্যধারা চলমান থাকলে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ পাওয়া যাবে না।


পরিপত্রে পুঁজিবাজারের বিষয়ে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের ৩০ দিনের মধ্যে কর পরিশোধ করতে হবে। বিনিয়োগের এক বছরের মধ্যে তোলা হলে তা অন্যান্য উৎস বলে গণ্য করা হবে। বিও অ্যাকাউন্টে জমা করা অর্থ সিকিউরিটিজ হিসেবে বিনিয়োগ না করলে এ ধারার সুযোগ পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া করদাতার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের কর ফাঁকির অভিযোগে কোনো কার্যধারা বা অন্য কোনো আইনের আওতায় আর্থিক বিষয়ে কোনো কার্যধারা চলমান থাকলেও পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ পাওয়া যাবে না।


পরিপত্রে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলশান মডেল টাউন, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল ও দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায় আবাসিক উদ্দেশ্যে নির্মিত ফ্ল্যাট বা ভবন কিনতে হলে প্রতি বর্গমিটারের জন্য এক হাজার ৬০০ টাকা উৎস কর দিতে হবে।


এতে আরো বলা হয়েছে, আবাসিক উদ্দেশ্যে নির্মিত ভবন বা ফ্ল্যাটের জন্য ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকা, ডিওএইচএস মহাখালী, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি, উত্তরা মডেল টাউন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, করওয়ান বাজার, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা, নিকুঞ্জ, চট্টগ্রামের খুলশী, আগ্রাবাদ ও পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, নাসিরাবাদ এলাকায় ফ্ল্যাট বা ভবন কিনলে এক হাজার ৪০০ টাকা উৎস কর দিতে হবে।


এসব এলাকার বাইরে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ফ্ল্যাট ও ভবন কিনতে এক হাজার টাকা উৎস কর দিতে হবে। এসব সিটি করপোরেশন ছাড়া অন্য সিটি করপোরেশনে ফ্ল্যাট বা ভবন কিনতে হলে উেস করের পরিমাণ ৭০০ টাকা। এর বাইরে অন্য এলাকায় ফ্ল্যাট বা ভবন কিনতে হলে ৩০০ টাকা উৎস কর দিতে হবে।


তবে ৭০ বর্গমিটার পর্যন্ত (কমন স্পেসসহ) আয়তনের আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টের জন্য উৎস করের হার ২০ শতাংশ কম হবে এবং অনধিক ৬০ বর্গমিটার পর্যন্ত আয়তনের আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টের উৎস করের হার ৪০ শতাংশ কম হবে।


আবাসিক ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে নির্মিত হলে রাজধানীর গুলশান মডেল টাউন, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল ও দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায় নির্মিত ফ্ল্যাট বা ভবন কিনতে হলে প্রতি বর্গমিটারে ছয় হাজার ৫০০ টাকা উৎস কর দিতে হবে।


পরিপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, অনাবাসিক উদ্দেশ্যে নির্মিত ভবন বা ফ্ল্যাটের জন্য ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকা, ডিওএইচএস মহাখালী, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি, উত্তরা মডেল টাউন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, কারওয়ান বাজার, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা, নিকুঞ্জ, চট্টগ্রামের খুলশী, আগ্রাবাদ ও পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, নাসিরাবাদ এলাকায় ফ্ল্যাট বা ভবন কিনলে পাঁচ হাজার টাকা উৎস কর দিতে হবে।


এসব এলাকার বাইরে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ফ্ল্যাট ও ভবন কিনতে তিন হাজার ৫০০ টাকা উৎস কর দিতে হবে। এসব সিটি করপোরেশনের বাইরে অন্য সিটি করপোরেশনে অনাবাসিক উদ্দেশ্যে নির্মিত ফ্ল্যাট বা ভবন কিনতে হলে উৎস করের পরিমাণ দুই হাজার ৫০০ টাকা। এসবের বাইরে অন্য এলাকায় ফ্ল্যাট বা ভবন কিনতে হলে এক হাজার ২০০ টাকা উৎস কর দিতে হবে।


গাড়ির নিবন্ধন ফি, রুট পারমিট, ফিটনেস, মালিকানা সনদ চূড়ান্ত করে পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির একাধিক গাড়ি থাকলে ৫০ শতাংশের বেশি হারে অগ্রিম কর দিতে হবে। গাড়ির ফিটনেস নবায়নের আগেই এই অগ্রিম কর দিতে হবে।



সূএ: https://www.kalerkantho.com/online/business/2020/09/02/951326


মন্তব্যসমূহ